ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩) চলচ্চিত্র: মালো জীবন-বাস্তবতার মহাকাব্যিক নির্মাণ
Main Article Content
Abstract
ঋত্বিক কুমার ঘটক পরিচালিত তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩) চলচ্চিত্রে আমরা প্রত্যক্ষ করি, মালো জীবন-বাস্তবতার মহাকাব্যিক নির্মাণ। নির্মাণের প্রায় পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত হবার পরও, নিজ শিল্পকুশলতার গুণে এই চলচ্চিত্র আজও ধ্রুপদী চলচ্চিত্রের চিরকালীন আবেদন সৃষ্টিতে সক্ষম দর্শকের মনে- দেশ ও দেশের সীমানা ছাড়িয়ে। মহাকাব্যের কেন্দ্রে সাধারণত থাকে কোনো বীরোচিত চরিত্র। তিতাস একটি নদীর নাম-এ নেই পুরাণ বা ইতিহাস-আশ্রিত কোনো বিখ্যাত চরিত্রের চিত্রায়ণ। এখানে তিতাস নদীর সমান্তরালে এগিয়েছে নিম্নবর্গের মালোদের সমষ্টিগত জীবনপ্রবাহের ভাঙা-গড়া। তাদের আনন্দ-বেদনা, উৎসব, নৈবেদ্য, জন্ম-মৃত্যু, জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই, ঐক্য, ঐক্যের ভাঙন, পরাজয়, ক্ষয়ের ভেতর আবারও নতুন জীবনের সূচনা - ইত্যাদি নানা বিষয় এ চলচ্চিত্রে ঠাঁই পেয়েছে। অন্ত্যজ ও লোকজ জীবনাশ্রিত এই সকল বিষয় তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রে মহাকাব্যের চিরকালীন রূপ প্রাপ্ত হয়েছে ঋত্বিকের চলচ্চিত্রিক মৌলিকত্বের কারণে। এ মৌলকত্ব বাঙালির আবহমান সাংস্কৃতিক চেতনাজাত। বক্ষ্যমান প্রবন্ধের মূল লক্ষ্য, এই চলচ্চিত্রের মহাকাব্যিক নির্মাণ ভঙ্গি অন্বেষণ। একই সাথে, ব্রাত্য জীবন কীভাবে মহাকাব্যের প্রচলতি সংজ্ঞা ও স্বরূপকে অগ্রাহ্য করে এ চলচ্চিত্রে প্রাপ্ত হয়েছে মহাকাব্যিক মহিমা Ñ তাও অন্বেষণ করা হয়েছে এ প্রবন্ধে। সবমিলিয়ে, তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রের বিষয় আর নির্মাণ কৌশলে মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রের ভঙ্গি ও প্রবণতা অনুসন্ধান আর অনুধাবনের প্রচেষ্টায় এগিয়েছে এ প্রবন্ধ।