বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে দৃশ্যগত যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা ও জাতীয় ঐক্যের চেতনা
Main Article Content
Abstract
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ত্রিশ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা অর্জন করি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরি হয়েছিল সেই ১৯৪৭ সাল থেকেই যখন ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালির মাঝে স্বাধিকার চেতনার উন্মেষ ঘটে। একে একে আসে ‘৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ‘৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন, বঙ্গবন্ধু তাঁর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের বিজয়। গানে, কবিতায়, ছবি আঁকায়, সিনেমায় বাঙালির সৃজনশীলতার শতমুখী স্ফুরণ ঘটেছিল ওই উত্তাল সময়ে। আমাদের চারুশিল্পীরা যেমন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া শিল্পী কামরুল হাসান, শিল্পী নিতুন কুন্ডু, শিল্পী প্রানেশ মন্ডল, শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী তথা সত্তর দশকের চিত্রশিল্পীরা তাদের তুলির সঠিক ব্যবহার করেছিলেন দৃশ্যগত যোগাযোগ মাধ্যম যেমন : ফেস্টুন, ব্যনার, পোস্টার আকাঁর মধ্য দিয়ে। রং-তুলির আঁচড়ে ক্যানভাস রাঙিয়ে, সাত কোটি বাঙালির মাঝে স্বাধীনতার আগুন ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সে সময়কার শিল্পীরা। তবে যেকোনো আন্দোলনে চিত্রকলা বা রং তুলির রেখাও যে প্রতিবাদের অনেক বড় হাতিয়ার হতে পারে এবং অবদান রাখতে পারে বিজয়ে তারই প্রমাণ করে আমাদের ১৯৭১ সালের আন্দোলনের নানা ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে। এই গবেষণা প্রবন্ধের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী যোদ্ধারা যে রণকৌশল প্রয়োগ করেছিলেন তার ইতিহাস পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করার মাধ্যমে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে অপসংস্কৃতিমুক্ত রুচিশীল চিত্রকলাচর্চায় কৌতুহলী করে তোলা, সেই সাথে দেশত্ববোধ জাগ্রত করা।