পূর্ব বাংলায় শ্রম আইন প্রণয়ন, প্রয়োগ ও বাস্তবতা : ১৯৪৭-৭১
Main Article Content
Abstract
শ্রমক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিকের পারস্পারিক সম্পর্ক, শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রভৃতি সংরক্ষণের জন্য প্রণীত হয় শ্রম আইন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। ১৯৪৭-১৯৭১ কালপর্বে পূর্ব বাংলায় বিদ্যমান শ্রম আইনসমূহ যেমন-‘দ্য ট্রেড ইউনিয়ন অ্যাক্ট’, ‘দ্য ট্রেড ডিসপিউটস অ্যাক্ট’, ‘দ্য ম্যাটারনিটি বেনিফিট অ্যাক্ট’, ‘দ্য ওয়ার্কম্যানস কমপেনসেশান অ্যাক্ট’,‘দ্য পেমেন্ট অব ওয়েজেস অ্যাক্ট’ প্রভৃতি আইনের শর্তসমূহ যথাযথভাবে শিল্পকারখানাগুলোতে প্রয়োগ করা হয়নি। অপরদিকে পাকিস্তান সরকার বহিরাগত অবাঙালি মালিকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষণ করতে গিয়ে শ্রমিকশ্রেণির উপর নানাবিধ নিয়ন্ত্রণ আইন আরোপ করে যা ছিল শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থি। ফলে শ্রমিক শ্রেণি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সমগ্র পাকিস্তান আমলে তাই শ্রমিকের নিম্ন মজুরি, অতিরিক্ত কর্মঘন্টা, শ্রমিক ছাঁটাই, কাজের অনুন্নত পরিবেশ, বোনাস প্রভৃতি সংকটের সমাধান হয়নি। ফলে এ সময় শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ পরিলক্ষিত হয় এবং অসংখ্য শ্রমিক আন্দোলন সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির শুরু থেকেই শ্রমিকদেরকে সংগঠিত করা এবং শ্রমিক আন্দোলনসমূহে নেতৃত্ব প্রদান করেন কমিউনিস্ট ও বামপন্থী নেতৃবৃন্দ। ফলে আন্দোলন জোরদার হয় এবং ক্রমে এ আন্দোলন পূর্ব বাংলার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হয়। আলোচ্য প্রবন্ধে ১৯৪৭-১৯৭১ কালপর্বে পূর্ব বাংলায় শ্রম আইন ব্যবস্থা থাকার পরেও কেন পূর্ব বাংলায় মালিক-শ্রমিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং কীভাবে শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে তা অনুসন্ধান করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।